আল্লামা সাঈদীর হ*ত্যা নিয়ে তার ছেলে মাসুদ সাঈদীর জালামই বক্তব্য
“আমি আমার বাবার সাথে দেখা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন বারান্দায় অপেক্ষা করেছি। দরজায় দরজায় কেঁদেছি। কিন্তু খুনি হাসিনার জন্য আমাকে একবারও দেখা করতে দেয়া হয়নি। পৃথিবীর কোন আইনে মৃত্যুপথযাত্রী পিতার সাথে তার সন্তানকে দেখা করতে নিষেধ করা হয়? আল্লামা সাঈদীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সারাদেশে অত্যাচার ও জুলুম চালিয়েছে। আমরা প্রতিটি জুলুম ও হত্যার বিচার চাই এবং কাউকে ক্ষমা করব না। তবে যারা পরিবেশগত কারণে আওয়ামী লীগের সাথে সমন্বয় করতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা থাকবে। কিন্তু যারা ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিছিল করেছে, তাদের ক্ষমা নেই।”
তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল হত্যার মধ্য দিয়ে। শেখ মুজিব ১৯৬৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার শাহেদ আলীকে সংসদে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন। আওয়ামী লীগের ইতিহাসই ছিল হত্যার ইতিহাস। ২০১০ সালে ক্ষমতায় এসে ২০ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। যুদ্ধেও এত সংখ্যক অফিসার শহীদ হয়নি, যতটা তারা এই তিন দিনে হত্যা করেছে।”
মাসুদ সাঈদী বলেন, “২০১৩ সালে তথাকথিত ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল থেকে আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার রায় দেয়া হয়েছিল। যখন সারা বাংলাদেশ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল, তখন খুনি হাসিনার নির্দেশে কুরআন প্রেমিক জনতার বুকে গুলি করে ৩০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ৫ মে শাপলা চত্বরে যখন আলেম সমাজ নাস্তিকদের বিচার দাবি করতে একত্রিত হয়েছিল, তখন রাতের আঁধারে হাজার হাজার আলেমকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। শেখ হাসিনার হাত হাজারো, লাখো মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।”
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠী ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সমাবেশে ইউনিয়ন সভাপতি মো: আনিসুর
রাহমান মল্লিকের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা আবু দাউদের সঞ্চালনায় এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, “আমার পিতা পিরোজপুর-১ আসনে দু’বার এমপি ছিলেন। তার পরের আসনে আরো দু’জন এমপি হয়েছেন। তারা কী করেছেন, তা আমি বলতে চাই না। আমি আল্লামা সাঈদীর সন্তান। তার পবিত্র রক্ত আমার শরীরে রয়েছে। আমি আজ আপনাদের সামনে ওয়াদা করছি, যদি আল্লাহ তায়ালা আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেন, তাহলে আমি ওয়াদা করছি যে, নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও জিয়ানগরকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।”
কর্মী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা আমির অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন ফরিদ, বাংলাদেশ ইসলামী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ঢাকাস্থ নাজিরপুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ মোল্লা, পিরোজপুর জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, জেলা জামায়াতের সদস্য ড. আব্দুল্লাহীল আল-মাহামুদ, নাজিরপুর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাবেক সেনা কর্মকর্তা কাজী মোসলেম উদ্দীন, নাজিরপুর উপজেলা সাবেক ছাত্র নেতা মো: মোস্তাফিজুর রহমান ও উপজেলা ছাত্র শিবির সভাপতি মো: আবু হানিফ শেখ প্রমুখ।
Comments
Post a Comment